দাজ্জালের কথায় আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষন হবে......
যদি আপনাকে বলি, প্রযুক্তি ব্যাবহার করে বিশ্বের যেকোনো দেশের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তবে সেটা বিশ্বাস করবেন? একজন যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে আপনার অবিশ্বাস করাটাই স্বাভাবিক কিন্তু এটাই ঘটছে। জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ বা Weather Modification বুঝতে হলে আগে আপনাকে weather modification এর কয়েকটি টার্ম জানতে হবে। Weather modification মানে হলো নিজ ইচ্ছামতো আবহাওয়াকে পরিবর্তন করা। Geoengineering হচ্ছে আবহাওয়া সম্পর্কিত ইঞ্জিনিয়ারিং।
Weather modification এর জন্য মোটামুটি ৪টি পদ্ধতি আছে।
এ পদ্ধতিতে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনকে প্রচণ্ড তাপে বাষ্পে পরিণত করা হয়। যা মেঘরূপে আকাশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ে।

বাসার উপর দিয়ে প্রায়ই সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘের উড়ে যাওয়া দেখেন। এই মেঘ কিন্তু বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়েনা, কারণ তা ঘনীভূত হতে পারে না। পানির ছোট ছোট মলিকিউলগুলো এতটাই হালকা
যে তা আকাশে ভাসতে থাকে৷ সিলভার আয়োডাইড,
পটাশিয়াম আয়োডাইড ও
ড্রাই আইস ব্যাবহার করে এসব
মলিকিউলকে একত্রিত করে বৃষ্টি বানানো হয়, আর এটিই ক্লাউড সিডিং বা ক্লাউড ম্যানুফ্যাকচারিং।
অবাক হচ্ছেন!! ধীরে!
অবাক হবার আরো অনেক কিছুই বাকি আছে।

প্লেন যখন উড়ে যায় তখন তার পিছনে বেশ লম্বা
একটা সাদা দাগ দেখা যায়।
বায়ুমন্ডলের উপরদিকের তাপমাত্রা খুব কম থাকে। প্লেন থেকে বের হওয়া গরম বাতাস ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে মিশে একরকম ধোঁয়ার সৃষ্টি করে যেমনটা শীতকালে আমাদের মুখ থেকে বের হয়, একে Chemtrail বলে। যা আমাদের কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু যদি ইচ্ছাকৃতভাবে আকাশে
এলুমিনিয়াম, বেরিয়াম, স্ট্রনটিয়ামের কেমিকেল স্প্রে করা হয়, তাহলে কি ঘটবে? এসব ধাতু বায়ুমন্ডলে স্প্রে করলে তা সূর্যরশ্মিকে প্রতিফলিত করে এবং কেমিকেলের এই চাদর পৃথিবীর তাপকে বাইরে যেতে বাঁধা দেয়। এভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। Chemtrail চেনার উপায় হচ্ছে এতে থাকা কেমিকেল আকাশে ছড়াতে বেশি সময় নেয়। কিন্তু এই কেমিকেলগুলো যেহেতু হঠাৎ করে স্প্রে করা হয় তাই chemtaril এর ক্ষেত্রে সাদা দাগ হঠাৎ করে শুরু হয় এবং হঠাৎ করেই শেষ হয়ে যায়।

চতুর্থটি হচ্ছে HAARP যার পূর্ণরূপ হলো The High frequency Active Auroral Research Program৷
একে আয়োনস্ফিয়ারিক হিটার হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। HAARP এর টাওয়ার থেকে খুবই উচ্চ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আয়োনস্ফিয়ারে প্রেরণ করে আয়োনস্ফিয়ারকে উত্তপ্ত করা হয়। প্রাকৃতিকভাবে বায়ুমন্ডলে পানি একটি নির্দিষ্ট নিয়মে মুভ করে। কিন্তু যখনি উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির রেডিয়েশন ব্যাবহার করে তাপমাত্রাকে বৃদ্ধি করা হয় তখন ন্যাচারাল ওয়াটার ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায়। এবং বায়ুমন্ডলে পানি চলাচলের প্রক্রিয়াও পরিবর্তিত হয়। এ নিয়ন্ত্রিত পরিবর্তনকে ব্যাবহার করা হয় weather modification করার জন্য। আরো একটি পদ্ধতি আছে যেখানে স্যাটেলাইট ব্যাবহার করা হয় আবহাওয়াকে কন্ট্রোল করার জন্য। এখন আপনাদের সামনে প্রমাণ দেখাই। পৃথিবীতে চলমান Geo-engineering এর প্রমাণ দেখুন।


আমেরিকার সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (CIA) এর ডিরেক্টর Jhon Brennan কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনস এর এক মিটিং এ জিওইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যাপারে বলেন- আরেকটা উদাহরণ হচ্ছে Array of Technology যা সম্মিলিতভাবে Geo-engineering কে বোঝায়। যা বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনে উষ্ণতার প্রভাবকে উলটে দিতে সাহায্য করতে পারে। একটি বিষয় আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। তা হলো "বায়ুমন্ডলের এরোসল ইনজেকশন বা SAI"৷ এটি বায়ুমন্ডলে "রাসায়নিক কণা" বপণ করার একটি পদ্ধতি। যা সূর্যের তাপকে প্রতিফলিত করতে সাহায্য করবে।

জিওইঞ্জিনিয়ারিং ও ওয়েদার কন্ট্রোলের টেকনোলজির ব্যাপারে আমরা আজ জানলেও আমেরিকার ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন কেনেডি ১৯৬১ সালে এবং ৩৬তম প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন ১৯৬২ সালে এব্যাপারে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন। আমাদের আবার প্রস্তাব করতে হবে সকল দেশের মধ্যকার সহযোগিতা পূর্ণ চেষ্টা করার,
আবহাওয়া ভবিষৎবাণী করার ক্ষেত্রে। এবং পরিশেষে আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে। চূড়ান্তে আমাদের প্রস্তাব করতে হবে একটি বৈশ্বিক যোগাযোগ স্যাটেলাইটের জন্য। যা সম্পূর্ণ পৃথিবীকে যুক্ত করবে টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, রেডিও এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে (কেনেডি, ১৯৬১সালে)৷ একটি ভালো অবস্থা যা পূর্বাভাস দেয় আবহাওয়া স্যাটেলাইট এর উন্নয়নের বুনিয়াদের, যা মেঘের স্তরের নিয়ম-কানুনকে নির্ধারণ করবে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এমনকি আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা মানে পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করা (লিন্ডন,১৯৬২)৷ আমেরিকায় ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট-১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৪ দিনে হারিকেন হার্ভে ও হারিকেন ইরমা আঘাত হানে। শুনলে আশ্চর্য হবেন এটি মানব সৃষ্ট ছিল - এমনটাই দাবি করেন প্রফেসর জেমস ম্যাকিনি। এমনকি ওয়েদার মডিফিকেশন আর গুপ্তগোষ্ঠীর মধ্যকার সম্পর্কও তিনি বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। সেটা না হয় আরেকদিন আলোচনা করবো।

হুম,কৃত্রিম ভাবে মেঘ তৈরির মেশিনও আবিষ্কার করা হয়েছে।

শুরুতেই আপনাদের ক্লাউড সিডিং এর ব্যাপারে বলেছিলাম। যেখানে মেঘকে ঘনীভূত করে বৃষ্টি করা হয়।
ক্লাউড সিডিং যে ব্যাবহারিকভাবেই প্রমাণিত তা জানার জন্য ইউটিউবে cloud seeding লিখে সার্চ দিন ভুরি ভুরি প্রমাণ পাবেন। এই ক্লাউড সিডিং প্লেনটা সাধারণ প্লেনের মতই যা 'Alberta Program' (Alberta কানাডার এক শহর) এর জন্য ব্যাবহৃত হয় এবং যে কারণে ক্লাউড সিডিং করা হয় তা হলো শিলাবৃষ্টির ক্ষয়ক্ষতিকে কমানো, আর অকালে বৃষ্টিপাত শুরু করা যেন ঝড় বেশি সময় না পায় বড় আকারের শিলাপাথর তৈরি করতে। এই ভীতিকর আর্টিফিশিয়াল মেঘগুলো বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেমন আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতেও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে৷ আপনারা অনেকেই নেটে, ফেসবুকের নিউজফিডে আকাশের মেঘের এমন অনেক ছবি দেখেছেন যাতে স্পষ্ট প্রতিবিম্ব, লেখা বা প্রাণীর প্রতিকৃতি দেখা যায়৷ আসলে এগুলো সবই আর্টিফিশিয়াল বা কৃত্তিম মেঘের খেলা৷ এই আর্টিফিশিয়াল মেঘগুলো নাসা তৈরী করে থাকে৷ সর্বশেষে আপনাদের সামনে "Official report of cloud seeding in Texas" এর ছবি দিলাম৷ এটা Cloud seeding কোম্পানীর official report যার নাম Trans-pecos৷ এই report অনুযায়ী টেক্সাসে ২৪ অগাস্ট ২০১৭ সালে Cloud seeding করা হয় যার উদ্দেশ্য ছিলো বৃষ্টি ঝড়ানো ও ঝড় তৈরী৷
0 Comments